১৪ নভেম্বর বিশ্ব শিশু দিবস ও নেহেরুর জন্মদিন কেন পালিত হয়?
বিশ্ব শিশুবিশ্ব শিশু দিবস প্রতিবছর ২০ নভেম্বর পালিত হয়।যা শিশুদের কল্যাণের উন্নতির জন্য বিশ্বব্যাপী প্রতিশ্রুতি চিহ্নিত করে। যাই হোক ভারত সহ অনেক দেশে এটি ১৪ নভেম্বর ভারতের প্রধানমন্ত্রী জওহর
লাল নেহেরুর জন্মবার্ষিকীর সাথে মিলে যায়। নেহেরু শিশুদের পতি তার ভালোবাসা এবং জাতির ভবিষ্যৎ গঠনে তাদের সম্ভাবনার প্রতি তার বিশ্বাসের জন্য পরিচিত ছিলেন। এ দিনটি শিশুদের অধিকার এবং তাদের মঙ্গল বিকাশ এবং সুরক্ষা নিশ্চিত করার প্রয়োজনীয়তা অনুস্মারক হিসেবে কাজ করে।
ঐতিহাসিক পটভূমি।
বিশ্ব শিশু দিবসের উৎপত্তি ১৯৫৯ সালে। জাতিসংঘ কর্তৃক শিশু অধিকারের
ঘোষণাপত্র গৃহীত হওয়ার পর থেকে পাওয়া যায়। এই যুগান্তকারী দলিলটি শিশুদের
বিশেষ যত্ন সহায়তা পাওয়া প্রয়োজনীয়তা স্বীকার করে এবং শিশুদের অধিকার
অধিকার স্থাপন করে। বিশ্বব্যাপী পরবর্তীকালে ১৯৮৯ সালে শিশু
অধিকার কনভেনশন ( সিআরস ) গৃহীত। এই অধিকার গুলিকে আরো দৃহপ্রয়োজনীয়তায়
উপর যোড় দেওয়া হয়।
২০০০ সালে জাতিসংঘে সাধারণ পরিষদ আন্তর্জাতিক একতা বিশ্বব্যাপী শিশুদের মধ্যে
সচেতনতা এবং শিশুদের কল্যাণের উন্নতির জন্য ২০ নভেম্বর কে বিশ্ব শিশু দিবস হিসেবে
মনোনীত করা হয়। দরিদ্র শিক্ষা স্বাস্থ্যসেবা এবং সহিংস্রোতার মতে বিশ্বব্যাপী
শিশুদের প্রভাবিত করে এমন সমস্যার সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি লক্ষ্যে বিভিন্ন
কার্যক্রমের মাধ্যমে পালিত হয়ে থাকে ১৪নভেম্বর শিশু দিবস।
১৪ নভেম্বর তাৎপর্য
ভারতের ১৪ নম্বর বিশেষ তৎপর্য বহন করে। এটি ভারতের জওহরলাল নেহেরুর উত্তরাধিকার উদযাপন করে যিনি স্নেহের সাথে শিশুদের মধ্যে চাচা নেহেরু চাচা নেহেরু নামে পরিচিত। এটি প্রগতিশীল ভারতের জন্য তার দৃষ্টিভঙ্গির মধ্যে রয়েছে শিশুদের অধিকার এবং কল্যাণের উপর জোর দেওয়া।
নেহেরু বিশ্বাস করতেন যে দায়িত্বশীল নাগরিক হওয়ার জন্য শিশুদের লালন পালন ও
শিক্ষিত করা উচিত। শিশুদের প্রতি তার স্নেহ এই দিনের সম্মেলন করা হয়, যার সমাজের
শিশুদের গুরুত্ব এবং ভবিষ্যৎ গঠনে তাদের ভূমিকা তুলে ধরে।জাতে করে শিশুদের
সকল অধিকার এবং মঙ্গল কামনার জন্য সকল পদক্ষেপ নেওয়া হয়।
আরো পরুনঃ ২০২৫ সালের ক্যালেন্ডার
১৪ নভেম্বরের থিম এবং ক্রিয়াকলাপ
প্রতিবছর বিশ্ব শিশু দিবস একটি নির্দিষ্ট থিমের সাথে যুক্ত হয়। যার লক্ষ্য
শিশুদের দ্বারা সম্মুখীন হওয়া চাপের সমস্যা গুলি সমাধান করে।
ক্রিয়া-কলাপ গুলির মধ্যে রয়েছে শিক্ষামূলক অনুষ্ঠান, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠা্ এবং
শিশুদের অধিকার সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে এবং তাদের কল্যাণের প্রচারের জন্য
পরিকল্পিত প্রচারণা স্কুল এবং সমস্যা গুলি ইনভেন্ট গুলি সংঘটিত করে।
১। **সচেতনতা প্রচারঅভিযান** শিশুদের অধিকার এবং শিশুরা যেসব চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয় যেমন শিশুশ্রম প্রচার এবং শিক্ষার সুযোগের অভাব সম্পর্কে স্কুল এবং সম্প্রদায়গুলি মানুষকে শিক্ষিত করার জন্য প্রচারণা চালায়।
২। **সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।** নাচ নাটক এবং গান সহ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শিশুদের প্রতিভা প্রদর্শন করে এবং সমাজের তাদের গুরুত্বের উপর জোর দেয়। এ ইনভেন্ট গুলি প্রায় সকল দেশে বিশ্বজুড়ে শিশুদের বিভিন্ন সংস্কৃতি অনুষ্ঠান উদযাপন করে।
৩।** ক্রিয়া ইভেন্ট** শিশুদের মধ্যে শারীরিক স্বাস্থ্য ও দলবদ্ধভাবে কাজ করার জন্য খেলাধুলার কার্যক্রম সংঘটিত হয়। শিশুদের শৃঙ্খলা এবং সহযোগিতার সম্পর্কে শেখার জন্য একটি প্ল্যাটফর্ম প্রদান করে।
৪।** কমিউনিটি সার্ভিস** অনেক প্রতিষ্ঠান শিশুদের সম্প্রদায়ের সেবায় নিয়োজিত হয়ে উৎসাহিত করে, অন্যদের প্রতি দায়িত্ববোধ ও সমবেদনা জাগিয়ে তোলে। এর মধ্যে অনাথ আশ্রমে স্বেচ্ছাসেবক বা সুবিধা বঞ্চিত শিশুদের জন্য ড্রাইভ সংগঠিত করার মত কার্যক্রম অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে।
৫। **শিক্ষামূলক কর্মশালা *** শিশুদের তাদের অধিকার সম্পর্কে স্বীকৃত করতে এবং অন্যায়ের বিরুদ্ধে কথা বলার জন্য তাদের ক্ষমতায়নের জন্য কর্মশালা এবং সেমিনার পরিচালিত হয়। প্রায় সকল সুরক্ষা স্বাস্থ্য এবং শিক্ষার গুরুত্বের মত বিষয়বলিতে প্রকাশ করে।
শিশুদের অধিকার নিয়ে বৈশ্বিক দৃষ্টিভঙ্গি
বিশ্ব শিশু দিবস সিআরসি তে অন্তর্ভুক্ত শিশুদের অধিকার তুলে ধারার একটি প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করে। কনভেনশন চারটি মূলনীতির উপর জোর দেওয়া হয়।
১। **বৈষম্যহীন** সমস্ত শিশু জাতি লিঙ্গ অক্ষমতা অন্য কোন অবস্থার ভিত্তিতে বৈষম্য মুক্ত পরিবেশে বেড়ে ওঠার অধিকার রয়েছে শিশুদের।
২।**শিশুর সর্বোত্তম স্বার্থ** শিশুদের বিষয়ে গৃহীত সিদ্ধান্ত বলে সর্বদা তাদের সর্বোত্তম সার্থকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। তাদের মঙ্গল ও বিকাশ নিশ্চিত করতে হবে।
আরো পরুনঃ ২০২৫ সালের ক্যালেন্ডার
৩। **জীবন বেঁচে থাকার এবং বিকাশের অধিকার*** প্রতিটি শিশুই জীবনের সহযাত অধিকার রয়েছে এবং তাদের বেঁচে থাকা জন্য সুরক্ষা ও বিকাশ নিশ্চিত করার জন্য রাষ্ট্রের দায়িত্ব বাধ্যবাধকতা রয়েছে।
৪।**শিশুর মতামতের প্রতি গুরুত্ব দেওয়া ** শিশুদের প্রভাবিত করে এমন বিষয়ে তাদের মতামত এবং মতামত প্রকাশ করা অধিকার রয়েছে। এবং তাদের কণ্ঠস্বর বিবেচনা করা উচিত।
শিশুদের জন্য বর্তমান চ্যালেঞ্জ
অনেক ক্ষেত্রে অগ্রগতি সত্ত্বেও শিশুরা বিশ্বব্যাপী উল্লেখ্যযোগ্য চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছে। দরিদ্র শিক্ষার অভাব এবং স্বাস্থ্য সংকেত এর মতো সমস্যা গুলি বিশেষ করে উন্নয়নশীল দেশগুলোতেও শিশুদেরকে অসামঞ্জস্যপূর্ণভাবে প্রভাবিত করে।
কিছু শিশুদের উপর চাপা চ্যালেঞ্জ অন্তর্ভুক্ত
১।**দারিদ্র** লক্ষ লক্ষ শিশু চরম দারিদ্রতার মধ্যে বাস করে খাদ্য বিশুদ্ধতা পানি এবং আশ্রয়ের মত মৌলিক প্রয়োজনীয়তার একসেসের অভাব রয়েছে। দারিদ্র তাদের শিক্ষা ও উন্নয়নের সুযোগ সীমিত করে।
২।** শিক্ষা** মানসম্পন্ন শিক্ষার এক্সেস অনেক শিশুর জন্য একটি চ্যালেঞ্জ, বিশেষ করে গ্রামীণ এবং সুবিধাবঞ্চিত এলাকায়। করোনা কালীন সময়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বৈষম্যকে আরো বাড়িয়ে দিয়েছে। যার ফলে ঝরে পড়ার হার বেড়েছে এবং শিক্ষাগত ব্যাঘাত ঘটেছে।
৩।** স্বাস্থ্য সেবা** শিশুরা অপুষ্টি থেকে শুরু করে অপর্যাপ্ত সেবা পরিষেবার মত স্বাস্থ্য চ্যালেঞ্জের মহোম্মুখী হয়ে থাকে। অনেক শিশু প্রয়োজনীয় টিকা পায় না, তাদের প্রতিরোধ যোগ্য রোগের ঝুঁকিতে ফেলে দেয়।
৩।**সহিংসতা এবং শোষণ*** শিশুরা প্রায় সহিংসতা অপব্যবহার এবং শোষণের শিকার হয়। শিশুশ্রম পাচার এবং বাল্যবিবাহের মতো সমস্যাগুলি বিশ্বের অনেক অংশে তাদের অধিকার এবং উন্নয়নের ক্ষতি করে।
৪।**মানসিক স্বাস্থ্য** শিশুদের মানসিক স্বাস্থ্য একটি কর্ম বর্ধমান স্বীকৃত উদ্যোগ। পারিবারিক অস্থিরতা এবং সামাজিক বিছন্নতার মত কারণগুলি তাদের মানসিক সুস্থতাকে উল্লেখ্যযোগ্য ভাবে প্রভাবিত করতে পারে।
সরকার এবং সংস্থা ভূমিকা
সরকার এনজিও এবং আন্তর্জাতিক সমস্যা গুলি শিশুদের অধিকার এবং কল্যাণের পক্ষে অকালতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। উদ্যোগের মধ্যে রয়েছে
১। **নীতি উন্নয়ন** সরকারগুলিকে এমন নীতিগুলি বিকাশ ও বাস্তবায়ন করতে উৎসাহিত করা হয় যার শিশুদের অধিকার কে অগ্রাধিকার দেয়। শিক্ষা স্বাস্থ্যসেবা এবং সহিংসতা থেকে সুরক্ষার উপর দৃষ্টি নিবন্ধন করে।
২।**তহবিল এবং সংস্থান** শিশুদের কল্যাণের উন্নতির লক্ষ্যে প্রোগ্রাম গুলির জন্য বর্ধিত অর্থায়ন অপরিহার্য। এর মধ্যে শিক্ষা স্বাস্থ্য সেবা এবং সামাজিক পরিবেশ গুলিতে বিনিয়োগ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
৩।**সচেতনতামূলক প্রচার অভিযান** এনজিও গুলির প্রায় শিশুদের অধিকার সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে এবং পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য সমপ্রদায়ক সংঘটিত করতে প্রচার অভিযান নেতৃত্ব দেয়। এই প্রচার অভিযানগুলি শিশুদের প্রভাবিত করে স্থানীয় এবং বৈশ্বিক উভয় সমস্যা গুলির উপর ফোকাস করে যাতে করে পরবর্তীতে এগুলো সমস্যার সমাধান করা হয়।
৪।**অ্যাডভোকেসি** সংস্থাগুলি শিশুদের অধিকারের প্রতি তাদের প্রতিশ্রুতি জন্য সরকারকে দায়বদ্ধ রাখতে কাজ করে এবং এই অধিকার গুলিকে রক্ষা করে এবং প্রচার করে এমন আইনি পরিবর্তনের জন্য চাপ দেওয়া হয়।
আরো পরুনঃ ২০২৫ সালের ক্যালেন্ডার
১৪ নভেম্বরে আরো অন্যান্য দিবস
ভারতে ১৪ নভেম্বর শুধুমাত্র শিশু দিবস হিসেবেই পালিত হয় না। এই দিনটি অন্যান্য
গুরুত্বপূর্ণ দিবস ও ঘটনাবলীর সঙ্গেও যুক্ত রয়েছে। এখানে আরো কিছু দিবসের কথা
উল্লেখ করা হলো। যার ১৪ নভেম্বর ভারতে বা বিশ্বব্যাপীতে পালিত করে।
বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস
বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস ওয়ার্ল্ড ডায়াবেটিস ডে প্রতিবছর ১৪ নভেম্বর পালন করা হয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ডাব্লু এইচ ও এবং আন্তর্জাতিক ডায়াবেটিস ফেডারেশন আইডিএফ ১৯৯১ সালে বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস চালু করা হয়। এ দিবসের মূল উদ্দেশ্য ডায়াবেটিস সম্পর্কে জনসচেতনতা বৃদ্ধি করা এবং প্রতিরোধ ও ব্যবস্থাপনার জন্য কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা।
জোহরলাল নেহেরুর জন্মদিন
১৪ নভেম্বর ভারতীয় রাজনীতিবিদ ও স্বাধীন ভারতের প্রধান প্রধানমন্ত্রী
জওহরলাল নেহরুর জন্মদিন হিসেবে পালিত হয়। নেহেরু শিশুদের খুব ভালবাসতেন এবং
শিশুদের ভালবাসার প্রকাশের জন্যেই তার জন্মদিনটি শিশু দিবস হিসেবে পালিত হয়।
ন্যাশনাল অরগানাইজেসন অফ স্ট্রিট ভেন্ডারস অব ইন্ডিয়া ( NOSVI ) দিবস
ভারতের ১৪ নভেম্বর দিনটি রাস্তার দোকান দারদের অধিকার কল্যাণের জন্য সচেতনতা
বৃদ্ধি এবং তাদের কাজের মান উন্নয়নের জন্য দিবস হিসেবে ( NOSVI ) কর্তৃক পালন
করা হয়।
ইমতিয়াজ ২৪ ব্লগের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন।প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।;
comment url